সেপ্টেম্বরে আন্তঃব্যাংকে ৭৭ কোটি ডলারের লেনদেন

কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ছয়টি বৈদেশিক মুদ্রায় আন্তঃব্যাংক লেনদেন চালু করার সুযোগ দেয়। এর মাধ্যমে এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের সঙ্গে এসব মুদ্রা লেনদেন করছে। তবে এক মাসে মাত্র দুই ধরনের (ডলার ও পাউন্ড) মুদ্রায় লেনদেন করেছে ব্যাংকগুলো। এ সময়ের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে আন্তঃব্যাংকে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে ৭৭ কোটি মার্কিন ডলার বা ৭৭০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, সেপ্টেম্বরে ছয়টি মুদ্রার মধ্যে শুধু মার্কিন ডলার ও ইউরোতে এক মাসে ২০ হাজার ৫৫৩টি লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। এ সংখ্যার পুরোটাই এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকের লেনদেন নয়। এখানে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির সঙ্গে লেনদেন হয়েছে ৯০৯ বার। সদ্য শেষ হওয়া সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাংক ও ব্যক্তি লেনদেনের মাধ্যমে মোট ৭৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নেওয়া-দেওয়া হয়েছে।

দেশের অভ্যন্তরে বা ব্যাংক থেকে ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রায় সবচেয়ে বেশি লেনদেন করেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন করেছে ইউসিবি ব্যাংক লিমিটেড। এর পরেই রয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড।

এক মাস আগেও শুধু দেশীয় মুদ্রা টাকার ক্ষেত্রে আন্তঃব্যাংক বা এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে লেনদেন পদ্ধতি চালু ছিল। একটা সময় আন্তঃব্যাংক লেনদেনের মাধ্যম ছিল কাগজ-কলমভিত্তিক। সে সময়ে ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ লেনদেন দিন শেষে নিষ্পত্তি হতো।

চলতি বছরের ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেখানে বলা হয়েছিল, দেশীয় মুদ্রার পাশাপাশি ডলারসহ অন্যান্য বিদেশি মুদ্রার রিয়েল-টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) বা তাৎক্ষণিক লেনদেন শুরু হতে যাচ্ছে। নতুন এ পদ্ধতিতে ব্যাংকগুলো আরও আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে লেনদেন নিষ্পত্তি করতে পারবে।

আরটিজিএসের ব্যবহার সম্পর্কিত একটি নীতিমালাও প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতিমালায় বলা হয়েছে, এখন মার্কিন ডলার, যুক্তরাজ্যের পাউন্ড, ইউরো, কানাডার ডলার ও জাপানের ইয়েন মুদ্রা কাগজ-কলমভিত্তিক বা সনাতন লেনদেন ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হচ্ছে। তাৎক্ষণিক লেনদেন শুরু হলে এই পাঁচ বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্গে চীনা মুদ্রা ইউয়ান যুক্ত হবে। অর্থাৎ এ নিয়ে মোট ছয়টি বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন নতুন এ পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করতে পারবে ব্যাংকগুলো।

আরটিজিএসের এ লেনদেন ব্যবস্থার পরিচালন পদ্ধতি দেশি-বিদেশি মুদ্রার ক্ষেত্রে একই হবে। এতে দ্রুত সময়ে এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা নেওয়া যাবে। সাথে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত লেনদেন নিষ্পত্তিও সহজ হবে। এর ফলে বেগবান হবে ব্যাংকিং, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম।

গত ৪ সেপ্টেম্বর এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আরটিজিএস ব্যবস্থায় বৈদেশিক মুদ্রায় অটোমেটেড ক্লিয়ারিং বাস্তবায়ন দেশের অভ্যন্তরে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত হলো। এ আধুনিকায়ন একটি ক্যাশলেস বেসড সোসাইটি গঠনের মাধ্যমে রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.