পুনর্ব্যবহারে আরও বিষাক্ত প্লাস্টিক

গ্রিনপিসের সতর্কতা


গ্লোবালবিজ ডেস্ক

একটি আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক চুক্তির আগে সতর্ক করে দিল পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিস। তাদের মতে, রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহার প্লাস্টিককে আরো বিষাক্ত করে তুলতে পারে। দূষণ সংকটে এই প্রক্রিয়াকে সমাধান হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

বৈশ্বিক এ নেটওয়ার্ক এক প্রতিবেদনে জানায়, চক্রাকার অর্থনীতির সঙ্গে প্লাস্টিক সহজাতভাবেই বেমানান। পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক তার ভার্জিন উপাদানের চেয়েও বেশি বিষাক্ত।

পৃথক গবেষণায় দেখা গেছে, পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ ছড়ানোর জন্য পুনর্ব্যবহারের সম্পর্ক রয়েছে।

প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে গত বছর ১৭৩টি দেশের প্রতিনিধিরা আইনত বাধ্যতামূলক চুক্তি করতে সম্মত হয়েছিল। প্লাস্টিকের উৎপাদন থেকে ধ্বংস পর্যন্ত ‘সম্পূর্ণ জীবনচক্র’ একটি নিয়মের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

প্যারিসে এই বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে আগামী সপ্তাহে। তবে উন্নয়নশীল দেশে প্লাস্টিক বর্জ্য ডাম্পিং ও পোড়ানোর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রান্তিক বাছাইকর্মীদের বাদ দেয়ার জন্য আয়োজনটি এরই মধ্যে সমালোচনার মুখে পড়েছে।

গ্রিনপিসের আশংকা, এই আলোচনা করপোরেট স্বার্থ দ্বারা প্রভাবিত হবে। কারণ জ্বালানি, পেট্রোকেমিক্যাল ও ভোগ্যপণ্য কোম্পানিসহ সংস্থাগুলো প্লাস্টিক দূষণ সংকটের সমাধান হিসেবে পুনর্ব্যবহারকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

গ্রিনপিস ইউএসএ-এর প্লাস্টিক প্রচারাভিযানের নেতৃত্ব থাকা গ্রাহাম ফোর্বস বলেন, প্লাস্টিকের বিষাক্ততা পুনর্ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পায়। চক্রাকার অর্থনীতিতে এর কোনো স্থান নেই। প্লাস্টিক দূষণ বন্ধের একমাত্র ও প্রকৃত সমাধান হলো, উৎপাদন ব্যাপকভাবে হ্রাস।

১৯৫০ সাল থেকে বিশ্বে প্রায় ৮০০ কোটি টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়েছে। গ্রিনপিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিকে উচ্চ মাত্রার ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে। যা দাহ্য, পরিবেশ দূষণকারী ও শরীরের হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দিতে সক্ষম।

ইন্টারন্যাশনাল পলিউট্যান্টস এলিমিনেশন নেটওয়ার্কের (আইপিইএন) উপদেষ্টা ড. থেরেসি কার্লসন বলেন, বিষাক্ত রাসায়নিক দিয়ে তৈরি হয় প্লাস্টিক। পুনর্ব্যবহারে ওই রাসায়নিকগুলো চলে যায় না। বিজ্ঞান স্পষ্টভাবে দেখায় যে প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার একটি বিষাক্ত চেষ্টা। যা আমাদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য হুমকি।

পুনর্ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত বর্জ্য প্লাস্টিক সাধারণত উচ্চ আয়ের দেশ বিশ্বের দরিদ্র অংশে রফতানি করা হয়। ফলে ওই সব দেশের জনগণই বেশি প্রভাবিত হন।

২০৬০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক উৎপাদন তিনগুণ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে গ্রিনপিস বলছে, যেকোনো বৈশ্বিক চুক্তি হবে প্লাস্টিক উৎপাদন দ্রুত উল্লেখযোগ্য পরিমাণ হ্রাস। ভার্জিন প্লাস্টিক সম্পূর্ণ নির্মূলে প্রথম পদক্ষেপ এটি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.