মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না ফেসবুক

গ্লোবালবিজ ডেস্ক

ফেসবুকের কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে এমন ধারণার পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পায়নি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইন্সটিটিউট। গবেষণা প্রতিবেদনটি রয়্যাল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

বুধবার ৯ আগস্ট ব্রিটিশ সংবাদমাদ্যম বিবিসি জানায়, গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণভাবে ফেসবুককে ক্ষতিকর হিসেবে দেখা হলেও এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। শুধু ফেসবুকের ওপরই এই গবেষণা চালানো হয়েছে। অন্যকোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে এক্ষেত্রে বিবেচনা করা হয়নি।

২০০৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ৭২টি দেশের প্রায় ১০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর ওপর জরিপ চালিয়ে গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

গবেষণাটি এমন সময়ে প্রকাশিত হলো যখন যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ক্ষতি কাটাতে আইন তৈরির কথা ভাবছে।

গবেষণার সঙ্গে জড়িত অধ্যাপক এন্ড্রু সাবিলস্কি বলেছেন, “সাধারণভাবে একটা বিশ্বাস প্রচলিত ফেসবুক ক্ষতিকর, কিন্তু গবেষণায় এই ধারণার পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং অনেক ক্ষেত্রে ফেসবুক মানুষের মনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।”

গবেষণায় ফেসবুকের প্রভাবে মানুষের ভালো থাকার ওপর কোনো প্রভাব পড়ছে কিনা সেটিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাপক এন্ড্রু সাবিলস্কি বিবিসিকে বলেন, “সাধারণত মনে করা হয় মানসিকভাবে ভালো থাকার জন্য ফেসবুক খারাপ। কিন্তু আমরা যখন সব তথ্য একসঙ্গে করলাম, সেসব তথ্য বিশ্লেষণ করা হলো, দেখা গেল বিষয়টা এমন নয়।”

এর আগে কিশোর কিশোরীদের প্রযুক্তি ব্যবহার ও তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ওপর গবেষণা চালিয়েছেন অধ্যাপক এন্ড্রু সাবিলস্কি। তখনও প্রযুক্তি ব্যবহারের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো সংযোগ খুঁজে পাননি তিনি।

এবারের গবেষণাটি ব্যক্তি পর্যায়ের প্রভাব নিয়ে করা। কোনো গোষ্ঠী বা গ্রুপের ওপর তার প্রভাব ছিল বিবেচনার বাইরে।

অধ্যাপক এন্ড্রু সাবিলস্কির মতে, “কারো কারো ওপর ফেসবুক ইতিবাচক প্রভাব রাখলেও হয়তো ছোট্ট কোনো গোষ্ঠীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি গবেষণার বিষয় ছিল না।”

ফেসবুকের বিভিন্ন কনটেন্ট এর ব্যবহারকারীদের জন্য কী ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে সেটিও গবেষণার বাইরে ছিল। কারণ হিসেবে গবেষকরা জানান, এসব বিষয় গবেষণার আওতায় নিয়ে আসার জন্য আরও বেশি তথ্যের প্রয়োজন।

এই গবেষণা চালাতে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা কোনো অর্থ দেয়নি। স্বাধীনভাবেই কাজটি পরিচালনা করা হয়েছে।

গবেষকরা ফেসবুকের কাছে বেশ কিছু তথ্য নিয়েছে। তার মধ্যে দেশে দেশে ২০০৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কীভাবে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবহারকারীদের দুই শ্রেণিতে ভাগ করেছেন তারা। একটি ভাগে রয়েছেন ১৩ থেকে ৩৪ বছর বয়সী ব্যবহারকারীরা; অন্যটিতে রয়েছেন ৩৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যবহারকারীরা।

বাথ স্পা ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও যোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক পিটার এচেলস এই গবেষণাকে আকর্ষণীয় বলে উল্লেখ করেছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.