গ্লোবালবিজ ডেস্ক
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপ থেকে ভুলিয়ে, ফুসলিয়ে তরুণীদের নিয়ে আসা হয়। কখনও তাঁরা বিক্রি হয়ে যান। তার পর দেহব্যবসায় নিয়োগ করা হয় তাঁদের।
গরিব দেশগুলি থেকে মেয়েদের ভুল বুঝিয়ে নিয়ে আসা হয়। তার পর তাঁদের জোর করে নামানো হয় যৌনবৃত্তিতে। নোংরা পরিবেশে ক্রীতদাসের মতো তাঁদের রেখে দেওয়া হয়। বছরের পর বছর ধরে চলে অত্যাচার। এ সব চলে খাস ব্রিটেনেই। সম্প্রতি এ রকম একাধিক চক্রের হদিস পেয়েছে ইয়র্কশায়ারের হাম্বারসাইড পুলিশ।
১৯৫৬ সাল থেকেই ব্রিটেনে যৌনপল্লি চালানো নিষিদ্ধ। যৌন অপরাধ আইনে তা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
যদিও তাতে ছবিটা বদলায়নি। বেআইনি ভাবে মেয়েদের যৌন পেশায় নামানো বন্ধ হয়নি। কখনও পেটের তাগিদে এ সব করেন মেয়েরা। কখনও বা বিক্রি হয়ে যান।
ইয়র্কশায়ারের ইস্ট রিডিংয়ের হাম্বারসাইড পুলিশ লুকিয়ে এই নিয়ে তদন্ত চালায়। তাদের রিপোর্ট বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপ থেকে ভুলিয়ে, ফুসলিয়ে তরুণীদের নিয়ে আসা হয়। কখনও তাঁরা বিক্রি হয়ে যান। তার পর দেহব্যবসায় নিয়োগ করা হয় তাঁদের।
পুলিশ তদন্তে নেমে জেনেছে, ১৯ থেকে ৩০ বছরের মেয়েদের দিয়েই এ সব কাজ করানো হয়। কোনও একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলে ব্যবসা। তাদের ক্রীতদাসের মতো রাখা হয়।
গোয়েন্দা সার্জেন্ট রিচ কার্ক জানিয়েছেন, হাল, গ্রিমসবি, স্কানথর্প, ইস্ট রিডিংয়ে সক্রিয় এই চক্র। কারণ সেখানে বাড়ির ভাড়া অনেক কম।
যাঁরা চক্র চালান, তাঁরা এ সব এলাকায় সস্তার কোনও বাড়ি ভাড়া নেন। নয়তো কোনও সংস্থার মাধ্যমে কয়েক দিনের জন্য বাড়ি ভাড়া নেন। সেখানেই চলে ব্যবসা।
এক একটি বাড়ি তিন দিনের জন্য ভাড়া নেওয়া হয়। খুব বেশি হলে কয়েক সপ্তাহের জন্য ভাড়া নেওয়া হয় বাড়িটি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মালিক এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
যে সব বাড়িতে এ ধরনের যৌন ব্যবসা চলে, সেখানে খদ্দের সেজে গিয়েছিল পুলিশ। গিয়ে দেখেছে, বাড়িগুলি অত্যন্ত নোংরা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। সারা দিন জানলা বন্ধ থাকে। ফলে আলো-বাতাস ঢোকে না।
গোয়েন্দা অফিসার কার্ক জানিয়েছেন, যৌন ব্যবসায় জোর করে নামানো হয় ওই মেয়েদের। ভয় দেখানো হয়। ফলে পুলিশকর্মীরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাঁরা সাহস করে কিছু বলেন না। আশঙ্কা, চক্র ফাঁস হয়ে গেলে তাঁদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, ইস্ট রিডিংয়ে ৫০টি, হালে ৫০টি, গ্রিমসবিতে ১০টি, স্কানথর্পে পাঁচটি যৌনপল্লি রয়েছে।
অফিসার কার্ক জানিয়েছেন, পুলিশের লক্ষ্য যৌন ব্যবসায় নিযুক্ত মেয়েরা বা খদ্দেররা নয়। বরং এই ব্যবসা যাঁরা চালান, তাঁদেরই ধরপাকড় করবে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, যৌনবৃত্তিতে নিযুক্ত মেয়েদের ধরলে কোনও লাভ হবে না। কারণ তাঁরা বেশির ভাগই বাধ্য হয়ে এই পথে নামেন। নয়তো বিক্রি হয়ে যান। তাই তাঁদের ধরপাকড় করে লাভ নেই।