বছরে ৪,৬০০ কোটি টাকা বেতনে সৌদি ক্লাবে মেসি!

স্পাের্টসবিজ ডেস্ক

প্রায় দেড় যুগ ধরে পরস্পরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার লড়াইয়ের মাধ্যমে ফুটবল বিশ্বকে শাসন করেছেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তো লা লিগা জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায় খেলার সুবাদে তারা নিয়মিতই মু্খোমুখি হতেন। মেঘে মেঘে বেলা গড়িয়ে আধুনিক ফুটবলের দুই মহারথী এসে দাঁড়িয়েছেন পেশাদার ক্যারিয়ারের গোধুলী লগ্নে।

তবে ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে ফের মেসি-রোনালদো দ্বৈরথ পুনর্জীবন পেতে পারে। গত জানুয়ারিতে আল নাসরে যোগদানের মাধ্যমে সৌদি আরবের ফুটবলে নাম লিখিয়েছেন রোনালদো। এবার তার দেখানো পথে হাঁটার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে মেসির সামনেও। ৩৫ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের সামনে লোভনীয় অঙ্কের বেতনসহ চুক্তির প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়েছে একটি সৌদি ক্লাব।
মেসির ব্যাপারে আগ্রহী সৌদি ক্লাবটির নাম না জানা গেলেও তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত পারিশ্রমিকের অঙ্কটা রীতিমতো চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতো।

কাতার বিশ্বকাপের পরপরই পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়নের কথা ছিল লিওনেল মেসির। কিন্তু বেশ কয়েক দফা আলোচনার পরও নতুন চুক্তি নিয়ে একমত হতে পারেনি দুই পক্ষ। সম্প্রতি ফরাসি ক্লাবটির অনুমতি ছাড়া সপরিবারে সৌদি আরব সফর করে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড দুই সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধ হন। নিষেধাজ্ঞার আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বুধবার ৩ মে খবর আসে, চলমান মৌসুম শেষেই পিএসজি ছাড়ছেন এই আর্জেন্টাইন মহাতারকা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের বরাত দিয়ে সৌদি সংবাদমাধ্যম আল অ্যারাবিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবে একটি ক্লাব মেসিকে দলে টানার চেষ্টা করছে। এমনকি সৌদি ক্লাবটির পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত চুক্তিটি ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঙ্কের চুক্তিও বলে শোনা যাচ্ছে। যদিও ক্লাবটির নাম জানা যায়নি।

সৌদি ক্লাবটির পক্ষ থেকে মেসিকে প্রস্তাবিত পারিশ্রমিকের অঙ্কটাও রীতিমতো চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতো। বেনামি সৌদি ক্লাবটিতে যোগ দিলে আর্জেন্টাইন তারকা বার্ষিক ৪০০ মিলিয়ন ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪,৬১৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার বেশি) আয় করতে পারবেন; যা কি-না আল নাসরের হয়ে খেলা রোনালদোর বর্তমান পারিশ্রমিকের প্রায় দ্বিগুণ। শুধু তাই না, ৩৫ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডই তখন বিশ্বের সর্বোচ্চ বেতনভোগী ফুটবলার হবেন।

মেসি সৌদি ক্লাবে যাচ্ছেন, এমন গুঞ্জন এটিই প্রথম না। গত কয়েক মাসে অনেকবারই সৌদি ক্লাব আল হিলালে মেসির যোগদান নিয়ে গুজব শোনা গেছে। আল হিলালে লিওনেল মেসির যাওয়ার গুঞ্জন সর্বপ্রথম উঠেছিল গত জানুয়ারির শুরুতে। তখন মেসির প্রতি আল হিলালের আগ্রহের কথা জানায় ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যম ক্যালসিওমের্কাতো ও স্পেনের সংবাদমাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভো। যদিও আল হিলালে মেসির পাড়ি দেওয়ার গুঞ্জন স্তিমিত হয়ে যায়।

পরবর্তীতে সেই গুঞ্জন আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে মার্চে। তখন হঠাৎ করেই সৌদি আরবে যান লিওনেল মেসির এজেন্ট হিসেবে কাজ করা বাবা হোর্হে মেসি। আল হিলালের সঙ্গে মেসির সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। এপ্রিলের শুরুতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, লিওনেল মেসিকে দলে ভেড়াতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব পাঠিয়েছে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল।

লিওনেল মেসি সৌদি আরবের ফুটবলে পা না রেখেও দেশটির সঙ্গে ভিন্ন একটি ক্ষেত্রে জড়িয়ে আছেন। সাত বারের ব্যালন ডি অর জয়ী ফুটবলার যে সৌদি আরবের পর্যটন বিষয়ক শুভেচ্ছাদূত। সেই কাজেরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি মরুর দেশে পরিবার নিয়ে পা রাখেন মেসি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সৌদি আরবে মেসির অবকাশযাপনের ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে পোস্ট করেছেন টুইটারে সৌদি আরবের পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খতিব।

এছাড়া, সৌদি আরবের প্রকৃতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেছেন লিওনেল মেসি। ওপরে নীল আকাশ আর নিচে সবুজ ঘাসে সারিবদ্ধ খেজুর গাছ- এমন দৃশ্যের একটি ছবি আপলোড করে ৩৫ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড ক্যাপশনে লিখেছেন, “কে ভেবেছিল, সৌদি আরব এত সবুজ? যখনই পারি, আমি দেশটির অপ্রত্যাশিত সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য সেখানে যেতে চাই।”

Leave A Reply

Your email address will not be published.