অর্থনীতি-বাণিজ্য

অনিশ্চয়তার ঝুঁকিতে দেশের অর্থনীতি!

গ্লোবালবিজ ডেস্ক

সামনের দিনগুলোয় আরো অনিশ্চয়তার ঝুঁকি দেখতে পাচ্ছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। মূল্যস্ফীতির হার গত মাসেও ছিল ৯ শতাংশের বেশি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চলতি হিসাবের ঘাটতি। শঙ্কা কাটেনি রিজার্ভ নিয়েও। বিশ্বব্যাংকের এক পর্যবেক্ষণেও ঠিক এ কথাই উঠে এসেছে। সংস্থাটি মনে করছে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে বড় ধরনের চাপ আগামীতেও থেকে যেতে পারে। এর ধারাবাহিকতায় বাড়তে পারে টাকার অবমূল্যায়ন, যা সামগ্রিক অর্থনীতিকে ঠেলে দেবে আরো বড় অনিশ্চয়তার মুখে।

সংস্থাটির ভাষ্য হলো মহামারীর অভিঘাত পার করে বেশ নির্বিঘ্নেই পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু অর্থনীতির বহিস্থ প্রভাবকগুলোর ভারসাম্যহীনতা মোকাবেলায় নেয়া পদক্ষেপগুলো ছিল অপর্যাপ্ত। দেশে এখন ব্যবসায়িক অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ও সুদহার পরিস্থিতি। আর্থিক খাতকে দায়গ্রস্ত করছে উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধনের অপর্যাপ্ততায় ভুগছে আর্থিক খাত। সব মিলিয়ে এখন টেকসই অর্থনীতির বেশকিছু ঝুঁকির মধ্যে দিন পার করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনের আগে ব্যয় বাড়লে বা নীতিগত সংস্কারগুলো পিছিয়ে দেয়া হলে ভবিষ্যতে বাজেট ঘাটতির মাত্রাও অনেকখানি বেড়ে যেতে পারে।

‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট-২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংকের এ পর্যবেক্ষণ উঠে আসে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সংস্থাটির কার্যালয়ে গতকালই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন প্রকাশকালে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের চিফ অর্থনীতিবিদ বার্নাড হ্যাভেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক লিড অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন এবং প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহবুব।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় আমদানি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। এতে স্বল্পমেয়াদে কিছু সুফল পাওয়া গেলেও দীর্ঘমেয়াদে তা কোনো কাজে আসবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা পরিসংখ্যানের সূত্র ধরে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে আসে, ২০২০-২১ অর্থবছরেও দেশে ব্যালান্স অব পেমেন্টের উদ্বৃত্ত ছিল ৯৩০ কোটি ডলার। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে আমদানির মাত্রা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। রফতানিতে চাহিদা বাড়ায় মাধ্যমিক পণ্যের (ইন্টারমিডিয়ারি গুডস) আমদানি বাড়িয়েছিলেন শিল্পোদ্যোক্তারা। আবার তাদের উৎপাদন ব্যয়কে বাড়িয়ে তোলে বৈশ্বিক পণ্যবাজারে মূল্যের ঊর্ধ্বমুখিতা। এর সঙ্গে সঙ্গে প্রবাসী আয় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে। বেড়ে যায় সরকারের চলতি হিসাবের ঘাটতিও। ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৩০ কোটি ডলারে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ডিস্টিংগুইশড ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি নিঃসন্দেহে সংকটে না হোক একটা বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে রয়েছে। সরকারের আয়-ব্যয় ও ঘাটতি, বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য এবং চলতি, বাণিজ্য ও সামগ্রিক—সব হিসাবেই সমস্যা রয়েছে। সময়মতো মোকাবেলা করা না গেলে এ দুই ধরনের সমস্যা বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। আমদানি ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণের মতো পদক্ষেপের মাধ্যমে সাময়িক কিছুটা স্বস্তি পাওয়া গেছে। ঈদকে কেন্দ্র করে রেমিট্যান্স বাড়ায় কিছুটা স্বস্তি আসবে। কিন্তু আমাদের যে মৌলিক সমস্যা ছিল সেগুলো তো দূর হয়নি। এজন্য যে ধরনের সংস্কার করা দরকার ছিল, সেটা করা হচ্ছে না। এমনটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে অঙ্গীকার করেও সরকার পুরোটা করছে না। এর একটি হলো সুদহারকে নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা এবং টাকার বিনিময় হারকে শিথিল করা। ব্যাংক খাতের সংস্কারের মতো কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার এটি সত্য। কিন্তু যে ধরনের দ্রুততার সঙ্গে ও গভীরভাবে এসব সংস্কার করার কথা ছিল সেটা হচ্ছে না। সমস্যা মোকাবেলার জন্য সরকার যে ধরনের অপর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে, তাতে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটেনি। ফলে ঝুঁকিগুলো রয়ে গেছে। সরকারের এ মুহূর্তে টাকার অভাব রয়েছে। ব্যাংক খাতে তারল্য ঘাটতি রয়েছে। এ অবস্থায় সরকারের প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংক যদি টাকা সরবরাহ করে তাহলে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে। এ ঝুঁকি কিন্তু ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। সমস্যা হচ্ছে এগুলো মোকাবেলায় সরকার যেভাবে সংকোচ নিয়ে এগোচ্ছে তাতে ঝুঁকি আরো বাড়ছে। নির্বাচন সামনে রেখে সরকারকে রাজনৈতিক বিবেচনায় পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় যা করছে, তাতে হিতে বিপরীত হয়ে যাচ্ছে। নীতি সংস্কারের দুর্বলতার পাশাপাশি নীতি সমন্বয়হীনতাও আমাদের আরো একটি বড় সমস্যা।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের ভেতরে অর্থনীতি বিভিন্ন ধরনের চাপের মধ্যে ছিল। আমরা একটা প্রবৃদ্ধির গল্প রচনা করেছিলাম। কাঠামোগত দুর্বলতার বিষয়গুলো আমরা স্বীকার করতে চাইনি। এর ফলেই আজকে এ পরিস্থিতি হয়েছে।’

বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলন অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতি বাড়ায় চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২ শতাংশে আটকে থাকতে পারে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রকৃত মজুরি ও সঞ্চয় কমায় ভোক্তাব্যয় শ্লথ হয়ে আসতে পারে। বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে চাহিদা পরিস্থিতির ভঙ্গুরতা, বৈশ্বিক ও স্থানীয় অর্থনীতির অনিশ্চয়তা এবং মূলধনি পণ্যের বর্ধিত দাম। আবার টাকার অবমূল্যায়ন, জ্বালানি ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং কিছু ভোক্তাপণ্যের ওপর আমদানিতে শুল্কবৃদ্ধি সামনের দিনগুলোয় মূল্যস্ফীতির আশঙ্কাকেও বাড়িয়ে তুলেছে। উচ্চমূল্যস্ফীতি একই সঙ্গে এখন দারিদ্র্য বিমোচনকেও ঝুঁকিতে ফেলছে। আবার দেশের রফতানি আয়কে চাপে ফেলতে পারে বৈশ্বিক মন্দার ঝুঁকি।

একাধিক বিনিময় হারের এ পদ্ধতি এখন ব্যালান্স অব পেমেন্টে চাপ সৃষ্টি করছে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। এ বিষয়ে সংস্থাটির ভাষ্য হলো রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে বিনিময় হারকে নিয়ন্ত্রণ করায় দেশে এখন অপ্রাতিষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। আবার রফতানিকারকদের আয় নির্ধারণ হচ্ছে বাজারের চেয়ে কম বিনিময় হারের ভিত্তিতে। ফলে তারাও এখন এ আয় দেশে আনার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী না। আবার আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং করেও অনেকে প্রণোদনা পাচ্ছেন বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

সংস্থাটি বলছে, বর্তমান বাস্তবতায় বাণিজ্য সংস্কারের দিকে এগোতে হবে সরকারকে। প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বাণিজ্য খাতে সংস্কার প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি কমার কোনো লক্ষণ নেই। কারণ, চাহিদা ও জোগান দুদিক থেকেই সমস্যা রয়েছে। জোগানের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বেড়েছে। এর প্রভাবে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। জোগানের ক্ষেত্রে আর্থিক নীতিমালা বাজেট ঘাটতি কমাতে কোনো কাজে লাগছে না।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য বৈশ্বিক অর্থনীতির তিনটি দিক প্রাসঙ্গিক। একটি হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে সুদহার কোন দিকে যাচ্ছে। আরেকটি হচ্ছে পণ্যবাজারের মূল্য কোন দিকে যাচ্ছে। বিশেষ করে জ্বালানি তেল, সার, লোহা, সিমেন্ট ও শিল্পের কাঁচামাল। তৃতীয়টি হচ্ছে ডলারের বিনিময় হার কোন দিকে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সুদহারের আভাস সম্পর্কে বলা যায়, যতটা ভাবা হয়েছিল এটি ততটা বাড়বে না। প্রশ্ন হচ্ছে এটি কমবে কিনা কিংবা স্থির থাকবে কিনা? এ দুটি যদি হয় তাহলে আমাদের জন্য ভালো। আর সেটি যদি না হয় এবং সুদহার বাড়তে থাকে, তাহলে আমাদের ঝুঁকিটা বেড়ে যায়। পণ্যবাজারের দামের পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে বলা যায় এটি কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল আবার কিছুটা অস্থিরতাও রয়েছে। ডলার নিয়ে একটি অনিশ্চয়তা রয়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতির অবনতি হলে ডলারের বিনিময় হারেও অস্থিরতা দেখা যেতে পারে। এসব ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য আমাদের কিছু সামষ্টিক নীতি সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি আমাদের কাঠামোগত সংস্কারের ক্ষেত্রে যে শ্লথগতি দেখা যাচ্ছে সেটিকে আরো বেগবান করতে হবে। এছাড়া আমাদের বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও সংস্কার করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সুদহার ও টাকার বিনিময় হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমরা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। বিনিময় হারে এ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কারণে রফতানি ও রেমিট্যান্স দুই মাধ্যমেই ডলারের সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই বিনিময় হারকে যদি বাজারভিত্তিক করা হয় তাহলে আনুষ্ঠানিক মাধ্যমে ডলারের সরবরাহ বাড়বে। আমার ব্যক্তিগত মূল্যায়ন হলো বিদ্যমান বিনিময় হারের কারণে আমরা গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রতি মাসে ৫০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স হারাচ্ছি। বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা হলে রফতানির অর্থ প্রত্যাবাসন বেড়ে যাবে। আমাদের উদ্দেশ্য মহৎ যে আমরা মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে বলে বিনিময় হারকে চেপে রাখছি। কিন্তু আমার তো মনে হয় চেপে রাখার কারণেই মূল্যস্ফীতি বেশি হচ্ছে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির বিদ্যমান পরিস্থিতিকে আমি বলব যে এটি রক্তক্ষরণ এবং একই সঙ্গে দেশের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। রাজনৈতিকভাবে হয়তো এ অবস্থাকে আরো কিছু দূর টেনে নেয়া যাবে এবং এভাবে চলতে থাকলে আমাদের অবস্থা আরো দুর্বল হতে থাকবে। আমাদের অর্থনীতির ভিতগুলো সার্বিকভাবে সব জায়গাতেই খারাপের দিকেই যাচ্ছিল এবং যাচ্ছে। বাহ্যিক পরিস্থিতির কারণেই যে আমাদের অবস্থা খারাপ হয়েছে এমনটি নয়। ভারতের ক্ষেত্রেও তো বাহ্যিক ঝুঁকি ছিল কিন্তু তারা তো ভালো করছে।’

admin

Recent Posts

অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন

স্পোর্টসবিজ ডেস্ক আজ (রোববার) আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম পরিণত হয়েছিল নীলের মহাসমুদ্রে। নিজ দেশে এক…

10 months ago

ডলার বিক্রি রিজার্ভে চাপ বাড়াচ্ছে

গ্লোবালবিজ ডেস্ক ডলার সংকট কাটাতে নানা উদ্যোগের পরও দিন দিন তা তীব্রই হচ্ছে। বর্তমানে এই…

10 months ago

তিশার আত্মহত্যা চেষ্টা!

বিনোদনবিজ ডেস্ক ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশা। তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে গুঞ্জন ওঠে।এমন…

10 months ago

ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টসবিজ ডেস্ক ১৯৯৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অজিদের সঙ্গে প্রোটিয়াদের ঐতিহাসিক টাই ম্যাচটি আজও অমর হয়ে আছে…

10 months ago

অক্টোবরে রপ্তানি আয়ে বড় ধস

গ্লোবালবিজ প্রতিবেদক অক্টোবরে রপ্তানি আয়ে বড় ধস, কমেছে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরু…

10 months ago

১৮ টাকা বাড়ল এলপিজি সিলিন্ডারের দাম

গ্লোবালবিজ প্রতিবেদক দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম ১২ কেজি।সিলিন্ডারের দাম নভেম্বর মাসের…

10 months ago

This website uses cookies.